#নয়াদিল্লি: শীত এলেই ত্বক নির্জীব আর রুক্ষ হয়ে পড়ে। দেখা দেয় নানা রকম সমস্যা। এর মূল কারণ হল শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা থাকে না। শীতের প্রকোপ থেকে ত্বক বাঁচাতে অনেকেই অনেক রকম টোটকা অবলম্বন করেন। তবে আসল রহস্য লুকিয়ে আছে আয়ুর্বেদে। তবে অন্যান্য প্রথায় যা হয় আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা হয় না।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলেন যে এই তত্ত্ব মেনে রূপচর্চা করার আগে সর্বপ্রথম নিজের ত্বকের ধরন দেখা দরকার। আয়ুর্বেদ বলে প্রতিটি মানুষের শরীরে তিন রকমের এনার্জি থাকে। বাত, কফ আর পিত্ত। এই তিন রকমের এনার্জির উপরেই একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিক চক্র বোঝা যায়। আয়ুর্বেদের ভাষায় একে দোষ বলা হয়। যাঁর দেহে যে রকম দোষ থাকে তাঁর ত্বকের জন্য সেরকমই পণ্য দরকার।
প্রাকৃতিক ক্লিনজার দরকার
আয়ুর্বেদ ভরসা রাখে প্রকৃতির উপর। তাই পরামর্শ দেওয়া হয় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করার। শীতের সময় যেমন বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে ঠিক তেমনই দূষণের পরিমাণ থাকে বেশি। বাইরে বেরোলেই ধুলো-ময়লা আটকে যায় ত্বকে। এমন অবস্থায় ত্বক পরিষ্কার করতে উবটান জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা উচিত। বেসন, হলুদ, দুধ, ইত্যাদি দিয়ে উবটান তৈরি করা যায় শীতের জন্য। আবার গরমকালে এর সঙ্গে মেশানো যেতে পারে নানা রকমের ভেষজ। কারণ সেই সময় সূর্যের তীব্র তেজের জন্য লালচে পোড়া ভাব দেখা দিতে পারে ত্বকে। তখন উবটানে অ্যালো ভেরা, শসা, পুদিনা ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। এগুলো সব কুলিং এজেন্ট যা ত্বক ঠাণ্ডা রাখে।
স্ট্রেস মুক্ত থাকতে হবে
যত বেশি মানসিক চাপ বা স্ট্রেস থাকে তত বেশি করটিসল হরমোন নির্গত হতে থাকে। এই হরমোন ত্বকে বলিরেখা নিয়ে আসে, ত্বক শুষ্ক নির্জীব ও রুক্ষ করে দেয়। ত্বক ভাল রাখতে হলে কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমতা বজায় রাখা শিখতে হবে। হাসিখুশি নির্ভার থাকলে ত্বকও ভাল থাকে।
আরও পড়ুন: শুধু টম্যাটো খাইয়েই সকলের তারিফ পান, শীতে পাতে টম্যাটো পড়ুক এইভাবে…
সুষম আহার
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলেন যে ত্বক বাইরে থেকে উজ্জ্বল দেখাতে ভিতর থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। আর তার জন্য ভাল ভাবে খাওয়াদাওয়া করতে হবে। প্যাকেটজাত এবং প্রসেসড খাবার নয়- তাজা ফল, শাক, সবজি এই সব খেতে হবে।
ত্বকের মাসাজ
এটা করতে গেলে কিন্তু পার্লার বা স্পাতে ছোটার দরকার নেই একদম। আয়ুর্বেদের পরিভাষায় একে অভ্যাঙ্গ বলে। এই মাসাজ নিজে নিজেই করা যায়। আমরা সকলেই জানি ফেসিয়ালের সময় মুখে যে মাসাজ করা হয় তাতে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় যাতে ত্বকে লাবণ্য ফিরে আসে। এই মাসাজ ঠিক সেই কাজই করে। সকালে উঠে যে কোনও ভেষজ তেল বা সাধারণ সর্ষের তেল দিয়ে এই মাসাজ করা যেতে পারে। এই মাসাজ ত্বককে ডিটক্সিফাই করবে অর্থাৎ বিষমুক্ত করবে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে।
আরও পড়ুন: তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকা উদ্ধার, আয়কর দফতরের বিরাট হানা! তোলপাড় বাংলা
ঋতু অনুযায়ী ত্বকের রুটিন
আয়ুর্বেদে বার বার ঋতু অনুযায়ী রূপচর্চার রুটিন তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। একেক ঋতুতে একেক রকম আবহাওয়া থাকে। তার উপরে নির্ভর করেই এটা করতে হবে। ঋতু পাল্টে গেলে ত্বকের রুটিনও খুব স্বাভাবিক ভাবেই পাল্টে যাবে।
আয়ুর্বেদে ভরসা রাখতে হবে
কথায় বলে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু …। এক্ষেত্রেও তাই করতে হবে। এর ওর কথা শুনে নয়, নিজের চোখ কান খোলা রেখেই আয়ুর্বেদে ভরসা রাখতে হবে। নিজের ডায়েট হোক বা ফেসপ্যাক, সেখানে হলুদ, চন্দন, আমলা, ভৃঙ্গরাজ, তুলসি এগুলোকে রাখতে হবে। ত্বক ভাল রাখতে এই উপাদানগুলোর কোনও তুলনা হয় না।
আর্দ্র থাকতে হবে
ত্বকের আর্দ্রতা মানে শুধু বাইরের আর্দ্রতা নয়। ভিতরের আর্দ্রতাও জরুরি। তার জন্য সারা দিনে প্রচুর জল পান করতে হবে যাতে ত্বক ভিতর থেকে আর্দ্র থাকে। যদি ঠিকমতো নিয়ম মেনে জল পান করা যায় তাহলে ত্বক কোমল ও সুন্দর হবে।
এক্সারসাইজ করতে হবে
যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে ত্বক ভাল থাকে। প্রকৃতপক্ষে যে কোনও এক্সারসাইজ যা নিয়মিত করা যায়, করলে ভাল। কারণ এক্সারসাইজ করলে ঘাম ঝরে। ঘামের সঙ্গে ত্বকের বিষ বেরিয়ে যায় এবং এতে রক্ত সঞ্চালনও বৃদ্ধি পায়।
পর্যাপ্ত ঘুম
ত্বকের মেরামতি করতে ও তার আভা অটুট রাখতে যে কোনও মানুষের পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। একে রূপচর্চার ভাষায় বিউটি স্লিপ বলে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।