Signs of Diabetes in Children: যে সময়টা ছোটাছুটি করে খেলাধুলোর কথা, সেই সময়টাতেই নেতিয়ে পড়ছে শিশু। সঙ্গে মাথা ঘোরা, ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়া, অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া, শ্বাসকষ্ট লেগেই রয়েছে। চিকিৎসককে দেখানোর পর জানা গেল, মাত্র আড়াই বছরের শিশু ডায়াবেটিসের শিকার।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১.১ মিলিয়ন শিশু এবং কিশোর (২০ বছরের নিচে) টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর ১৩২,০০০ শিশু এই রোগের শিকার হচ্ছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে গেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় মানুষ। যদিও রক্তের গ্লুকোজ শক্তির প্রধান উৎস। এবং প্রতিদিনের খাবার থেকেই সেটা শুষে নেয় শরীর। আর ইনসুলিন হল একটা হরমোন যা রক্তের গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে। ফলে শরীর যখন পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না তখন গ্লুকোজ রক্তেই থেকে যায়। ফলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন – মেদ ঝরানো থেকে যৌন ইচ্ছে বৃদ্ধি, just কামাল দেখাবে ‘ঘরোয়া’ এই উপাদানটি! চিনে নিন..
ডায়াবেটিসের প্রকার: দুই ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায় টাইপ ১ এবং টাইপ ২। টাইপ ১ ডায়াবেটিসকে জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-ডিপেন্ডডেন্ট ডায়াবেটিস বলা হয়। এটা ক্রনিক রোগ, যখন প্যাংক্রিয়াস আদৌ ইনসুলিন তৈরি করে না বা করলেও খুব সামান্য করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে শরীরের সুগার (গ্লুকোজ) বিপাকের ওপরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। এই রোগে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতাকে প্রতিরোধ করে অথবা গ্লুকোজ মাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপযোগী পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ রয়েছে যা অনেক সময় চোখেই পড়ে না। তাই এই লক্ষণগুলো দেখলেই বাবা-মাকে সতর্ক হতে হবে।
চরম ক্লান্তি: বিভিন্ন কারণে শিশুদের মধ্যে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং অবসাদ দেখা দিতে পারে। কিন্তু শিশু যদি সারাক্ষণ ক্লান্ত এবং অবসন্ন থাকে তাহলে সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। কারণ এটা ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
আচমকা ওজন কমে যাওয়া: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের আচমকা ওজন হ্রাস পায়। কারণ অগ্ন্যাশয়ে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হওয়ায় রক্তের গ্লুকোজকে শক্তিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে শরীর প্রয়োজনীয় জ্বালানি পায় না। তখন শক্তির ঘাটতি মেটাতে চর্বি এবং পেশিগুলো পুড়তে শুরু করে। ফলে ওজন কমে যায়।
ঘাওয়া ও ঘুমের অভ্যাস বদলে যায়: ডায়াবেটিসের কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে যা খাওয়া এবং ঘুমের অভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে খিদে-তেষ্টা বেড়ে যাওয়া, ঘুম না হওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়। এই দিকগুলো বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘন ঘন প্রস্রাব: বাচ্চাদের ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হল ঘন ঘন প্রস্রাব। তেষ্টা বেড়ে যাওয়ায় জল বেশি খাওয়ার বার বার বাথরুমে দৌড়তে হয়।
আরও পড়ুন – কোষ্ঠকাঠিন্যকে অবহেলা করছেন? নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছেন, সতর্ক হোন এখনই
ঝাপসা দৃষ্টি: বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসের ফলে চোখের সমস্যা বিশেষ করে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। রক্তে উচ্চ শর্করার কারণে চোখের লেন্স ফুলে যায়। ফলে স্বচ্ছ দেখতে অসুবিধা হয়।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা: ডায়াবেটিসের সঙ্গে শিশু বমি বমি ভাব, অম্বল, হাত-মুখ ফোলার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর কারণ হল ডায়াবেটিস গ্যাস্ট্রোপেরেসিস, এটা এমন একটি অবস্থা যা খাদ্য হজম করার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে।
মুখে ও শ্বাস প্রশ্বাসে দুর্গন্ধ: এটা কিটোঅ্যাসিডোসিসের লক্ষণ হতে পারে, যা ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুতর জটিলতা। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যেই এটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তবে যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস রয়েছে তাদেরও এই অবস্থা হতে পারে। সন্তানের মধ্যে এমনটা দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Diabetes, Diet for Children, Parenting Tips