#নয়াদিল্লি: বয়স হয়েছে ৯৬ বছর। হাঁটার সময় সামনের দিকে একটু ঝুঁকে পড়েন। গায়ের চামড়াও একটু কুঁচকেছে। কিন্তু তারপরেও ইংল্যান্ডের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের (Queen Elizabeth II) রূপে টান পড়েনি একচুলও। হাসলে এখনও মুক্তো ঝরে।
এই বয়সেও লাঠি ব্যবহার করেন না এলিজাবেথ। কাবু করতে পারেনি করোনাও। দিব্যি হিল্লি দিল্লি ঘুরেও বেড়ান। প্রায় একশো বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এমন স্বাস্থ্যের রহস্য কী? ফিট থাকতে প্রতিদিন কী খান এলিজাবেথ? এমন প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। সম্প্রতি রানির ব্যক্তিগত শেফ ড্যারেন ম্যাকগ্রাডির ‘ইটিং রয়্যালি: রেসিপি অ্যান্ড রিমেমব্রেন্সেস ফ্রম অ্যা প্যালেস কিচেন’ শীর্ষক বইতে ফাঁস হয়েছে সে সব তথ্য। জানা গিয়েছে, তাঁর জন্য খাবার প্রস্তুত করেন ২০ জন বাবুর্চি। সেখান থেকে পছন্দ মতো বেছে নেন রানি।
দিনের শুরু: প্রায় গোটা বিশ্ব দিন শুরু করে কফি দিয়ে। এলিজাবেথ এখানে ভারতীয় ঘরানার। তিনি চোখ খুলে চুমুক দেন চায়ে। সকালে তাঁর জন্য প্রস্তুত করা হয় চিনি ছাড়া আর্ল গ্রে চা। অল্প দুধ দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকে কয়েকটা বিস্কুট। সাধারণ বিস্কুট নয়। হ্যালো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে জানা গিয়েছে, চকোলেটের কোটিং দেওয়া কুকি খেতে পছন্দ করেন রানি। নাম ‘চকোলেট বাথ অলিভার’। আমাদের ওই বিস্কুট না হলেও চলবে, মারি বা থিন অ্যারারুট বা ওটস বিস্কুটই যথেষ্ট- তবে চিনি ছাড়া চা খেলে লাভ বই ক্ষতি নেই।
আরও পড়ুন: কোথায় হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় অশনি-র ল্যান্ডফল? ক্ষতবিক্ষত হবে বাংলাও? হাওয়া অফিসের বড় খবর!
জলখাবার: চা খেয়েই স্নানে যান এলিজাবেথ। তারপর রাজকীয় পোশাক পরে আসেন জলখাবারের টেবিলে। তবে ভারী নয়, হালকা প্রাতঃরাশ করেন। সিরিয়াল ও ফল। কেলগসের স্পেশাল কেক, কোয়েকার ওটস ও উইটাবিক্স আছে পছন্দের তালিকায়। মাঝেমধ্যে স্বাদ বদলাতে টোস্ট আর মারমালেড তুলে নেন পাতে। ডিম খুব কমই মেনুতে থাকে। সিরিয়াল ও ফলের এই ব্রেকফাস্ট মধ্যবিত্ত বাঙালির আয়ত্তের বাইরে কিন্তু নয়!
মধ্যাহ্নভোজ: দুপুরের খাবারে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলেন এলিজাবেথ। তাঁর ব্যক্তিগত রাঁধুনি ম্যাকগ্রাডি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, রানির খাবারে কোনও রকম শর্করা বা স্টার্চ থাকবে না। আলু, পাস্তা, ভাত এড়িয়েই চলেন তিনি। বদলে পাতে থাকে গ্রিলড ডোভার সোল বা স্কটিশ স্যামন যা পালং শাক এবং জুকিনির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। এটা রানির অন্যতম পছন্দের খাবার হিসাবে ধরা হয়। গ্রিলড চিকেনের সঙ্গে সাধারণ স্যালাডও পছন্দ করেন। একই ভাবে আমরাও লাঞ্চ সারতে পারি পছন্দের মাছ ভাজা, সেদ্ধ মাংস আর স্যালাড সহযোগে।
আরও পড়ুন: নিউ দিঘা থেকে খেজুরি, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় ‘অশনি’ সংকেত, কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
বিকেলের চা: প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় বিকেলে এক কাপ চা আবশ্যক। সেটাতে কিছুটা রাজকীয় ব্যাপার থাকে। শসা, স্মোকড স্যামন, ডিম, মেয়োনিজ দিয়ে তৈরি ফিঙ্গার স্যান্ডউইচ বৈকালিক চাকে সঙ্গ দেয়। এ ছাড়া ছোট ছোট রাসবেরি জ্যাম স্যান্ডউইচও বেশ পছন্দ তাঁর। ম্যাকভিটিস রিচ টি বিস্কুট, স্কোনস ছাড়াও রানির পছন্দের বিভিন্ন স্বাদের কেক পরিবেশন করা হয়। খুব বেশি পয়সা খরচ না করেও আমরাও চা আর স্যান্ডউইচ বিকেলের জলখাবারে হাতে তুলে নিতেই পারি।
ডিনার: রাতেও হালকা খাবারই পছন্দ করেন এলিজাবেথ। স্যালাড এবং শাকসবজি তো থাকেই। সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই মেনুতে থাকে গ্রিল বা পোচ করা মাছ। ম্যাকগ্রাডি বলছেন, ‘রানি চাইলেই যা খুশি খেতে পারেন। কিন্তু এমন নিয়মানুবর্তিতাই তাঁকে সুস্থ রেখছে’। আমরাও রাতে এই নিয়ম মেনে হালকা, কম মশলা দেওয়া খাবার খেতে পারি।
ডেজার্ট: তবে হ্যাঁ, এলিজাবেথ চকোলেটপ্রেমী। বলা ভালো চকোহলিক। ডার্ক চকোলেট তাঁর খুব পছন্দের। যত গাঢ় হবে মুখে তত হাসি ফোটে রানীর। রাতে ডিনারের পর ঘরে তৈরি চকোলেট ডেজার্ট এবং চকোলেট বিস্কুট কেক খেতে পছন্দ করেন তিনি। মাঝেমধ্যে বাগানের টাটকা ফল যেমন বালমোরাল ক্যাসলের স্ট্রবেরি বা উইন্ডসর ক্যাসেলের গ্রিনহাউসের তাজা পিচও পরিবেশন করা হয়। ডার্ক চকোলেট কিন্তু আমাদেরও হাতের নাগালের জিনিস!
যা পছন্দ করেন না: রানির সবচেয়ে অপছন্দের জিনিস হল রসুন। কোনও খাবারে রসুন দেওয়াও তাঁর পছন্দ নয়। আর হ্যাঁ, গত ২০ বছরে একদিনও ফাস্ট ফুড অর্ডার দেননি এলিজাবেথ। ম্যাকগ্রাডি বলছেন, ‘এই বয়সেও এলিজাবেথকে এতটা জীবন্ত এবং চটপটে রেখেছে এই অভ্যাস’। এবার কি তাহলে ফাস্ট ফুড খাওয়ায় আমরাও রাশ টানতে পারি?
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Diet, Queen Elizabeth II