অতিরিক্ত গরমে প্রায়ই হাইপারথার্মিয়া-য় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়৷ সহজ ভাষায় একে বলা হয় ‘হিট ইলনেস’ বা অত্যন্ত তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতা৷ ৪ বছর বয়সি শিশু থেকে ৬৫ বছরের প্রৌঢ়, যে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন৷
হাইপারথার্মিয়া কী?
শরীর যখন অতিরিক্ত গরম হয়ে পড়ে তখন এর তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যায়৷ শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলে এর বিপরীত অবস্থা হয়, তখন তাকে বলে ‘হাইপোথার্মিয়া৷’ অতিরিক্ত গরম ও আর্দ্র পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ক্ষণ থাকলে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে৷ শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট অবধি হয়ে যেতে পারে৷
সাধারণ জ্বরের সঙ্গে পার্থক্য
হাইপারথার্মিয়া হলে শরীরের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট ‘সেট পয়েন্ট’ ছাড়িয়ে যায়৷ এই সেট পয়েন্টকে নিয়ন্ত্রণ করে হাইপোথ্যালামাস৷ কিন্তু জ্বর হলে হাইপোথ্যালামাসের প্রভাবে শরীরের সেট পয়েন্ট টেম্পারেচার বেড়ে যায়৷ সেক্ষেত্রে সংক্রমণ বা জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লড়াই করে৷ ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়৷ এটা কিন্তু শরীরের অভ্যন্তরীণ ইচ্ছাকৃত৷ হাইপারথার্মিয়া-য় কিন্তু শরীর নিজের থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে না৷
আরও পড়ুন : গরমে শরীরচর্চা বিঘ্নিত? এই প্রাতরাশ খেয়ে রোগা থাকুন
বিভিন্ন ধরনের হাইপারথার্মিয়া-
মৃদু থেকে জটিল একাধিক উপসর্গকে হাইপারথার্মিয়া বলা হয়৷ সেগুলির মধ্যে পড়ে-
হিট ক্র্যাম্প-ঘামের ফলে শরীর থেকে নুনজল বেরিয়ে গেলে টান ধরতে পারে পেশিতে৷ সাধারণত হাত ও পায়ের পেশিতে হয়৷
অস্বাভাবিক ক্লান্তি-শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে চলে যায়৷ এর ফলে হিট স্ট্রোকও হতে পারে৷
ত্বকের সংক্রমণ-লাল ব্রণ বা ফোস্কার মতো সংক্রমণ দেখা দেয় সাধারণত কনুইয়ে, স্তনের নীচে, যৌনাঙ্গে বা ঘাড়ে৷
হিট স্ট্রেস-দমকলবাহিনী, খনি ও কনস্ট্রাকশন এলাকায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের এরকম অবসাদ দেখা দেয়৷ এর ফলে মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গ প্রভাবিত হয়৷
হিট স্ট্রোক-হাইপারথার্মিয়ার সবথেকে বিপজ্জনক ধাপ৷ শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়৷ যদি তাপমাত্রা ১০৬ ডিগ্রি ফারনেহাইটের বেশি হয়, তা অত্যন্ত সঙ্কটজনক৷ এর ফলে মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে৷ হতে পারে মৃত্যুও৷
আরও পড়ুন :এক গাল মুড়িই পারে গরমে আপনাকে সুস্থ রাখতে
এড়াবেন কী করে
তীব্র গরম ও আর্দ্রতায় চড়া রোদে কায়িক শ্রম নয়
কাজের মধ্যে পান করতে থাকুন নুন চিনির জল
শিশুসন্তান বা পোষ্যকে বন্ধ গাড়িতে রেখে যাবেন না
তাপপ্রবাহ চললে শীতল জায়গায় রোদ এড়িয়ে থাকুন
হাল্কা রঙের সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরুন৷
আরও পড়ুন : স্কুলফেরত বাচ্চার ক্লান্তি থেকে আপনার মাইগ্রেনের যন্ত্রণা, গরমের কষ্ট নিমেষে দূর করে মিছরির পানা
চিকিৎসকের পরামর্শ
তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতায় সাধারণত প্রাথমিক শুশ্রূষাতেই সুস্থতা চলে আসে৷ ঠান্ডা, ছায়াচ্ছন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পর্যাপ্ত নুন চিনির জলপান করাতে হবে দ্রুত৷ নয়তো প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে৷ তবে জ্বর বেশি হলে, হাঁটতে, শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হলে, কথা বলতে জটিলতা হলে, খুব ঘাম হলে, সংজ্ঞা হারালে, অসংলগ্ন আচরণ দেখা দিলে চিকিৎসকের দ্বারস্থ যেতেই হবে৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Hyperthermia, Summer