#কলকাতা: প্রতিটি ভারতীয় পরিবারের রান্নাঘরেই মেলে হলুদ। হয় তো ছোট্ট একটা মশলা, কিন্তু এর গুণ গুনেও শেষ করা যাবে না। রান্নায় এক চিমটে হলুদই কামাল করে দিতে পারে। খাবারে রঙ যোগ করা তো বটেই। তার সঙ্গে সঙ্গে এর নানা গুণ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কী ভাবে। সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
আসলে হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন। এটি এক ধরনের অর্গ্যানিক, নন-টক্সিক রাসায়নিক যৌগ। যা খাবারে উজ্জ্বল হলুদ রঙ তো যোগ করেই। তার পাশাপাশি এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধর্মী-সহ আরও নানা উপাদান। এমনকী হলুদে অ্যান্টিসেপটিক ধর্মী উপাদানও রয়েছে। ফলে এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে দারুণ কাজ করে। কাটা-ছেঁড়া কিংবা ক্ষতর ক্ষেত্রে অব্যর্থ এবং সহজলভ্য ওষুধ হল হলুদ। এখানেই শেষ নয়, দাঁত কিংবা মুখের কোনও রোগের চিকিৎসায় হলুদ ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন – FIFA World Cup 2022: এবারের বিশ্বকাপে পাঁচ-পাঁচটি নতুন জিনিস!যা একেবারে বদলে দেবে খেলার ধরণ
এছাড়াও মুখের আলসারের চিকিৎসাতেও অত্যন্ত কার্যকর হলুদ। ফলে এই মশলা মাউথওয়াশ হিসেবে এবং দাঁতের ক্ষেত্রে হোয়াইটনিং এজেন্ট হিসেবেও কাজ করে। আবার প্লাক দূর করার জন্য এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে ডেন্টাল সিল্যান্ট হিসেবেও কাজ করে এই মশলা। এ-ছাড়াও নানা রোগের দুর্দান্ত ওষুধ হিসেবেও সহজলভ্য হলুদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর দামও এমন কিছু বেশি নয়। তাই রোজকার ওরাল কেয়ার হাইজিন রুটিনে এই মশলা যোগ করাই যেতে পারে। আর তা মুখের স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত ফলদায়ক হবে।
আজ তাই আমরা কথা বলব হলুদ-জল নিয়ে। এই উপাদান আমাদের মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করবে। আসলে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হলুদ-জল দিয়ে রোজ গার্গল করলে শরীর সুস্থ থাকে। তাই বিশদে দেখে নেওয়া যাক, এই উপাদানের উপকারিতার বিষয়ে।
গার্গল করার জন্য হলুদ-জল কীভাবে বানাতে হয়?
এর জন্য প্রথমে এক গ্লাস ইষদুষ্ণ জল নিতে হবে। তার মধ্যে আধ চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং দুই চিমটি ব্ল্যাক সল্ট যোগ করতে হবে। কিংবা একটি প্যানের মধ্যে জল নিয়ে তাতে হলুদ যোগ করে ২ থেকে ৫ মিনিট ধরে ফুটিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ফুটতে শুরু করলে গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে দিতে হবে। এর পর তা খানিকটা ঠান্ডা করে নিতে হবে। এটি ঈষদুষ্ণ থাকাকালীন তাতে দুই চিমটি সাধারণ লবণ যোগ করতে হবে। তাই দাঁত মেজে নেওয়ার পরে এই জল আর হলুদের মিশ্রণ দিয়ে গার্গল করে নিতে হবে। তাতে সারা দিন ধরে মুখে একটা তরতাজা ভাব বজায় থাকবে। মুখে দুর্গন্ধও হবে না।
মুখের ঘা বা মাউথ আলসার থেকে মুক্তি:
মুখের ক্ষত কিংবা ঘা বা মাউথ আলসার থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে হলুদ-জলের মিশ্রণ। এর জন্য অবশ্য বিশেষ কোনও ওষুধ খাওয়ার সে-রকম প্রয়োজন হবে না। ধরা যাক, মুখের ঘা হয়েছে। সে-ক্ষেত্রে তা দূর করতে হলুদ-জল দিয়ে প্রতিদিন গার্গল করতে হবে। এই মিশ্রণ ব্যবহার করে গার্গল করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই ক্ষত বা ঘা সেরে যাবে। খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে ভাল ফল।
মাউথ ফ্রেশনার হিসেবে কাজ করে হলুদ:
অনেকেই হয় তো জানেন না যে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করার অব্যর্থ দাওয়াই কিন্তু সেই হলুদই। হলুদ-জল দিয়ে গার্গল করলে সারা দিনে কোনও রকম মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করার আর প্রয়োজন পড়ে না। শুধু তা-ই নয়, হলুদ-জলের মিশ্রণ মুখের মধ্যে উপস্থিত ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তার পাশাপাশি, হলুদ-জলের মিশ্রণ মাড়ি সুস্থ রাখে এবং দাঁতের ক্ষয়ও রোধ করে।
গলা ব্যথা থেকে মিলবে মুক্তি:
দুই থেকে আড়াই বছর আগে যখন সারা বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন যে উপসর্গগুলি দেখা যাচ্ছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল গলা ব্যথা। এমনকী এই মারণ ভাইরাসকে হারিয়ে সেরে ওঠার পরেও রোগীরা গলার তীব্র ব্যথায় ভুগতেন। শুধু করোনা কেন, মরশুমি জ্বর এবং সর্দি-কাশির সময়েও তো গলা ব্যথা একটা অত্যন্ত সাধারণ উপসর্গ। আর হলুদ-জল এই সমস্ত উপসর্গ থেকে মুক্তি দিয়ে গলা ব্যথা তো দূর করেই এবং গলাকে আরামও দিতে সাহায্য করে। আর এ-ক্ষেত্রে আরও ভাল ফল পেতে প্রতিদিন অন্তত দু’বার করে হলুদ-জলের মিশ্রণ দিয়ে গার্গল করে যেতে হবে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Health Tips, Turmeric, Turmeric water