কলকাতা: গরমের দিনে কাজ করার মতো এনার্জি থাকে না বললেই চলে। মনে হয়, শীতকালটা এলেই বোধহয় ভাল হয়। কিন্তু ঠান্ডা পড়তে না-পড়তেই লেপ-কম্বলের তলায় সেঁধিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এই সময়টাতেও কোনও কাজ করার ইচ্ছে থাকে না। মনে হয়, সারা দিন শুধু বিছানায় বসে শুয়ে থাকা গেলে কী ভালই না হত! গোটা উত্তর ভারত জুড়েই বর্তমানে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। কুয়াশা এবং তীব্র ঠান্ডায় কাবু সেখানকার মানুষ। ফলে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কিংবা বাড়ির কাজ করতেও ইচ্ছে করে না। এমনকী শীতের দিনে সকালে ঘুম থেকে ওঠাও দুষ্কর। আবার ঘুম থেকে উঠতেও দেরি হয়ে যায়। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পরেও একটা আলস্য যেন সারা দিন ঘিরে থাকে। কিন্তু কখনও কি মনে হয়েছে যে, কেন শীতের দিনে মানুষ বেশি বেশি করে ঘুমোতে চান? কেনই বা কাজকর্মে আলস্যের ভাব থাকে?
সংবাদমাধ্যমের কাছে এই সব প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল পালমোনোলজি এবং স্লিপ মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. বিশ্বেশ্বরণ বালসুব্রনিয়ন। শীতের এই ঘুম-ঘুম ভাবের ব্যাখ্যা করে তিনি জানান যে, আমাদের ঘুমোনোর অভ্যেস নির্ভর করে সার্কেডিয়ান রিদম-এর উপর। এই বিষয়টা নিয়ে তিনি জানান যে, সার্কেডিয়ান প্রক্রিয়া হল আমাদের ইন্টারনাল টাইমকিপিং সেল বা কোষ। এই কোষগুলির জন্যই আমাদের শরীর পরিবেশ বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। আর পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে পড়ে চারপাশের তাপমাত্রা, আলো ইত্যাদি। আসলে এই কাজের জন্য কোষগুলি জাইটগিবার অথবা টাইম ক্লু-র সাহায্য নিয়ে থাকে।
যদিও সার্কেডিয়ান প্রক্রিয়া আবার তাপমাত্রা, শীত বা ঠান্ডা, কম তাপমাত্রা ইত্যাদি বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়। আর এর প্রভাবই পড়ে আমাদের ঘুমের ধরন এবং ঘুমের সময়ের উপর। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময় দিনের আলো কম থাকে এবং রাত সাধারণত বড়ই হয়। আর এটাই মেলাটোনিনের মাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং এই রাসায়নিক দমিত হওয়ার ফলে আমাদের শরীরকে আলস্য ঘিরে ধরে। দিন এবং রাতের পার্থক্যের জেরে ঘুমের ইচ্ছেটা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন যে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে গরমের সময় আমাদের মস্তিষ্ক বেশি পরিমাণে সক্রিয় থাকে। তবে শীতের সময় মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমতে থাকে। আর এই বিষয়টাই আমাদের ঘুমের উপর গভীর ছাপ ফেলে।
আরও পড়ুন– ত্রিপুরায় জনবিশ্বাস যাত্রার পাশাপাশি বিভিন্ন সভায় অংশ নেবেন মিঠুন
শীতকালে ঘুমের ইচ্ছে যেহেতু বেড়ে যায়, তাই সারা দিন ধরে আমাদের বিছানায় শুয়ে আরাম করতে ইচ্ছে করে। স্লিপ এডুকেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বলছে যে, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সময় বিছানায় থাকলে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হয়। আর সারা দিন বিছানায় পড়ে থাকলে তার প্রভাব আমাদের সার্কেডিয়ান রিদমের উপরেও পড়ে। যার ফলে ঘুমের সমস্যা হয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।