বাইরে থেকে কৃত্রিম পণ্য ব্যবহার না করে অনেকেই প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন নিতে ভালোবাসেন। প্রাকৃতিক দ্রব্য ত্বকের উপর ভাল প্রভাব ফেলতে পারে।
এই জৈব পণ্যগুলি ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্বারা তৈরি করা হয় না। তার ফলে আর যা-ই হোক ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। নিখুঁত ত্বক পেতে হলে বা তার যত্ন নিতে কিছু প্রাকৃতিক দ্রব্য ব্যবহার করা যেতেই পারে। এমন একটি উপাদান হল সূর্যমুখীর তেল। এটি নিয়মিত রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূর্যমুখী ফুলের কথা তো আমরা সকলেই জানি। সূর্যমুখী তেলও বেশ দামি ভোজ্য তেল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই তেলই হয়ে উঠতে পারে সুন্দর ত্বকের চাবিকাঠি। এই তেলে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা। সূর্যমুখী তেলের উপকারিতাগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সেই সঙ্গে ত্বকের যত্নে কী ভাবে এটি প্রভাব ফেলতে পারে, তাও জেনে নেওয়া যাক—
ডি-ট্যান ও মৃত কোষ অপসারণ:
সারাদিন ত্বক ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি, ময়লা, দূষণ ও ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে থাকে। এর ফলে ত্বকে ট্যান পড়ে, কালচে ছোপ দেখা দেয়। পাশাপাশি রোমকূপে ময়লা জমে যেতে পারে। সূর্যমুখীতে রয়েছে লিনোলিক অ্যাসিড। এই লিনোলিক অ্যাসিড ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি ত্বকে মেলানিনের উৎপাদন কমায়। তারই ফলে হাইপারপিগমেন্টেশন কমে যায়।
অন্য দিকে, তেলের ভিটামিন ই উপাদান ত্বককে ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ফলে ট্যান মুক্ত, সতেজ এবং পরিষ্কার ত্বক পাওয়া সম্ভব হয়।
নারকেল তেলের সঙ্গে সূর্যমুখীর তেল মিশিয়ে সরাসরি ত্বকে লাগানো যেতে পারে। হালকা হাতে মাসাজ করতে হবে। খানিকক্ষণ রেখে হালকা গরম জল দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে। খুব দ্রুত ফল দেখা যাবে।
বলিরেখা, ব্ল্যাকহেডের যম:
বেশির ভাগ প্রাকৃতিকভাবে উপাদানের মতো, সূর্যমুখী তেলও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিনে সমৃদ্ধ। এক ফোঁটা সূর্যমুখী তেল ছোট ব্রণ, বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা এবং হোয়াইট ও ব্ল্যাকহেডস কমাতে পারে। ফলে বলা যেতেই পারে ত্বকে হাজারো সমস্যার এক সমাধান। পাশাপাশি এই তেল এতই হালকা যে ত্বক সহজেই শোষণ করে নিতে পারে। ফলে একেবারেই চিটচিটে নয়। ফলে ত্বক দেখায় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে।
আরও পড়ুন : চুল আভায় ভরবে, বাড়বেও হু-হু করে! এই ৫ তেল মিশিয়ে যদি নিয়মিত লাগান!
এ ছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে আরও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতেও পারে সূর্যমুখী তেল। অকাল বার্ধক্যের লক্ষণ থেকে রক্ষা পেতেও ব্যবহার করা যায় এই তেল।
সূর্যমুখী তেল, দু’চার ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল বা লেবুর তেল মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। এর ফলে ত্বক সতেজ এবং নরম হয়ে উঠতে পারে। মাত্র দু’চার ফোঁটা ব্যবহার করতে হবে। তারপর হালকা স্ট্রোক এবং আলতো চাপে গোটা মুখে বা সারা গায়ে ম্যাসাজ করতে হবে। এর পর একটি ভেজা কাপড় দিয়ে ত্বক ভাল করে মুছে ফেলতে হবে।
ক্ষত নিরাময়:
বেশিরভাগ প্রাকৃতিক এবং জৈব পণ্যের মতো সূর্যমুখী তেলেও রয়েছে উপশমের ক্ষমতা। এই তেলে রয়েছে লিনোলিক অ্যাসিড। যা নতুন রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। ফলে ব্যথাহীন এবং দ্রুত ক্ষত নিরাময় করার ক্ষমতা রয়েছে এই তেলের।
প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজিং এবং ত্বক পরিষ্কার:
সূর্যমুখী তেল একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার। পাশাপাশি এতে রয়েছে ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট। ফলে ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে অতি আবশ্যক একটি দ্রব্য। কড়া রাসায়নিকের ব্যবহার না করেই মুখ পরিষ্কার করতে চাইলে ব্যবহার করা যেতেই পারে সূর্যমুখীর তেল। এতে ত্বকের আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। ত্বক হবে কোমল এবং উজ্জ্বল। ফলে ভাল মুভআপ-রিমুভার হিসাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই তেল।
শুধু তাই নয়, সকালে এই তেল দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে দিন শুরু করা যেতে পারে। তাতে একটা সতেজ স্পর্শ পাওয়া যাবে সারাদিন। আবার সারাদিনের ঝক্কির পরে সন্ধ্যায় সামান্য পরিমাণ তেল নিয়ে মেক-আপ তুলে ফেলা যেতে পারে। তারপর মৃদু মালিশও করা যেতে পারে।
ত্বকের প্রদাহ প্রশমন:
সংবেদনশীল বা শুষ্ক ত্বকে অনেক সময় লালচে ভাব দেখা যায়। সূর্যমুখী তেল সাময়িক ভাবে ত্বকের এই লালচে ভাব কমাতে পারে। এতে ত্বকের প্রদাহ কমবে। ত্বকের কোমলতা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। সূর্যমুখীর তেল দীর্ঘস্থায়ী গঠন প্রদান করে ত্বককে রক্ষা করতে এবং উপশম করতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এটি ত্বকে কোনও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।