#কলকাতা: বোঁদের হোক কিংবা মুগের বা নারকেলের বা বেসনের! লাড্ডু (Laddu) খেতে কে না পছন্দ করেন! বহুকাল ধরে বাহারি স্বাদের এই গোলাকৃতি মিষ্টির চাহিদা রয়েছে। যে কোনও উৎসব-অনুষ্ঠানে শুধু বাঙালি কিংবা অবাঙালি নয়, সারা বিশ্বের মানুষের অন্যতম পছন্দের মিষ্টি হল লাড্ডু। তাই আগামী দিনে ভারতের জাতীয় মিষ্টি হিসাবে বাছতে হলে লাড্ডুই কিন্তু প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে (History of Laddu)।
পূর্ব ভারতের একটি উপকথা আমাদের জানায় যে, এক আয়ুর্বেদজ্ঞ বৈদ্যর এক অনুগামী না কি একবার ভুল করে ওষুধের ফর্মুলাতে কয়েক ফোঁটা ঘি ঢেলে ফেলেছিলেন। পরে সেই মিশ্রণই ওষুধ হিসাবে ছোট ছোট গোলাকারে পরিবেশন করেন, যা থেকেই লাড্ডুর প্রবর্তন। যদিও লাড্ডু এইভাবে আবিষ্কার হয়েছিল কি না সেবিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে এই সুস্বাদু মোদক তৈরি ইতিহাস কী ছিল তা জানলে কিন্তু বেশ অবাক হতে হয়! মজার ব্যাপার হল, গোড়ার দিকে মিষ্টি ছাড়াও এই লাড্ডুগুলির উপকরণের গুণাবলীর জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হত। কথিত আছে যে এই লাড্ডুগুলি বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে দেওয়া হত। সেক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্যই মেথি, মাখানা এবং সোন্থ দিয়ে লাড্ডু তৈরি করা হত।
আরও পড়ুন-যৌন মিলনের সময়ে বা পরে কেঁদে ফেলা? কোন রহস্য লুকিয়ে আছে জটিল এই শারীরিক ইতিবৃত্তে?
আয়ুর্বেদে লাড্ডুর বিভিন্ন রেসিপি রয়েছে। যার মধ্যে একটি ছিল তিল, গুড় এবং চিনাবাদামের লাড্ডু যা এখন তিলের লাড্ডু নামে পরিচিত। আয়ুর্বেদাচার্য সুশ্রুত রোগীদের খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে অস্ত্রোপচারের চিকিৎসার জন্য এটিকে অ্যান্টিসেপ্টিক হিসাবে ব্যবহার শুরু করেছিলেন। সহজে ভোজ্যতার জন্য, তিল গুড় বা মধু দিয়ে একটি বলের আকার দেওয়া হত।
আরও পড়ুন-একবারে সব পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ হলে কী ঘটবে পৃথিবীতে? জানুন গুরুত্বপূ্র্ণ তথ্য
আবার নারকেলের লাড্ডু সহজেই তৈরি করা যায় যা দক্ষিণে নারাইল নাকরু নামে পরিচিত। কথিত রয়েছে, নারকেল নাড়ু চোল সাম্রাজ্যের সময়কার একটি মিষ্টি ছিল যা তখনকার দিনে যোদ্ধাদের শুভকামনার প্রতীক হিসাবে দেওয়া হত। আর একটি লাড্ডুর বৈচিত্র্য হল ফক্সটেল মিলেট লাডু, যা বর্তমানে মুরুগা মন্দিরে প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয়।
আবার খেজুর, ডুমুর এবং ফল ও উদ্ভিজ্জ বীজ দিয়ে তৈরি শাহি লাড্ডু পারস্য আক্রমণের হাত ধরে এদেশে এসেছে বলে বিবেচনা করা হয়।
নৃবিজ্ঞানীর মতে, উপাদানের সহজপ্রাপ্যতা, খেতেও ভাল লাগার কারণে লাড্ডু আমাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই জন্যই মিষ্টি এবং প্রসাদ হিসাবে লাড্ডুর ব্যবহার শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ রাখার পরও এটি নষ্ট না হওয়াতেও জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Laddu