হাড়ভাঙা খাটুনিরও প্রয়োজন নেই! সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সপ্তাহে এক ঘন্টার কম ওয়েট লিফট করলে ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমে যায়৷ জিমে বেশি সময় কাটালেই যে উপকার পাওয়া যাবে এমনটাও নয়। বরং ঘন্টার পর ঘন্টা এক্সারসাইজ করলে বাড়তি কোনও উপকার পাওয়া যায় না বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণায় কী বলা হয়েছে
এক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্যের জটিলতার ঝুঁকি কমাতে শরীরচর্চার গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। গবেষণার জন্য ১৩০০০ জন প্রাপ্তবয়স্কদের তথ্য সমীক্ষা করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সপ্তাহে এক ঘন্টার কম রেজিসট্যান্স এক্সারসাইজ করলে মেটাবলিক সিনড্রম হওয়ার ঝুঁকি ২৯ শতাংশ কম থাকে যার ফলে হার্টের রোগ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়ার ঝুঁকি ৩২ শতাংশ কমে যায়।
গবেষণা ঠিক কী কী এক্সারসাইজের কথা বলছে
বয়স ও লিঙ্গ নির্বিশেষে হাড়ের স্বাস্থ্য, শারীরিক এবং এমনকী মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উপরেও রেজিসট্যান্স এক্সারসাইজের উপকারিতা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা হয়েছে৷ কিন্তু কার্ডিওভাসকুলার অসুখের বিষয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাঁটার মতো এক্সারসাইজের গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। আবার গবেষকদের মতে, অন্যান্য অসুখের মতো হার্টের জন্যও ওয়েট লিফটিং অনেক বেশি উপকারী। এমনকি কার্ডিও এক্সারসাইজের তুলনায় ওয়েটলিফটিং হার্টের জন্য বেশি উপকারী বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। যদিও গবেষকদের একটি দলের মতে, দুই ধরনের এক্সারসাইজই হার্টের জন্য ভাল, তবে ওয়েটলিফটিং-এর কিছু অতিরিক্ত সুবিধা রয়েছে। যেমন এটি পেরিকার্ডিয়াল এডিপোস টিস্যু নামে এক ধরনের হার্টের ক্ষতিকর ফ্যাট কমায়। তবে হার্টের জন্য আরেকটি ক্ষতিকর ফ্যাট অর্থাৎ এপিকার্ডিয়াল এডিপোস কমাতে দুই ধরনের এক্সারসাইজই কার্যকরী। সেক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত এক দিন অন্তর রেজিসট্যান্স ট্রেনিং করতে পারলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে।
হার্টের জন্য ওয়েটলিফটিং কেন ভাল
সমীক্ষা অনুযায়ী, ওয়েট লিফটিং করলে চর্বিহীন পেশি বাড়ে যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে ভাল রেখে বেশি রক্ত সঞ্চালন করে। যার ফলে পরবর্তীকালে আর্টারিতে চাপ কমে এবং জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে এমন রোগের ঝুঁকিও কমে আসে।
কারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন
যাঁরা দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিমায় বসে থাকেন এবং যাঁরা শারীরিকভাবে কম সচল তাঁদের হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই গবেষক থেকে শুরু করে চিকিৎসকেরা সবাই দৈনন্দিন রুটিনে শরীরচর্চার পরামর্শ দেন। তবে সংশ্লিষ্ট গবেষণার তথ্য অনেককেই এক্সারসাইজ করার জন্যে উৎসাহ জোগাবে কারণ এক্ষেত্রে সপ্তাহে মাত্র কয়েক ঘন্টা এক্সারসাইজ করলেই বিভিন্ন স্বাস্থ্যের জটিলতা এড়ানো যায় বলে জানানো হয়েছে।
পরিবর্তনযোগ্য রিস্ক ফ্যাক্টর
কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আমাদের শরীরে জটিলতা তৈরি করলেও সেগুলি পরিবর্তন করা যায়, যেমন- হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়েবেটিস, শারীরিকভাবে সচল না থাকা, স্থূলতা এবং হাই ব্লাড কোলেস্টেরল। জীবনধারার অভ্যেসে পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ধরনের রিস্ক ফ্যাক্টরের জটিলতা এড়ানো যায়। তাই বেশি শারীরিকভাবে সচল থাকা, মরশুমি ফল ও সবজি খাওয়া, ওজন ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করলে অনেকটাই রোগের ঝুঁকি কমানো যায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Heart