দশমী মানেই মায়ের বিদায়। বাঙালি মনে প্রাণে বিশ্বাস করে ঘরের মেয়ে গৌরী, স্বামী সোহাগিনী, এই দিনেই সে ফিরে যাবে কৈলাসে। সীমন্তিনী মেয়েকে তাই সিঁদুরে রাঙিয়ে, পানের খিলি হাতে দিয়ে, মিষ্টি মুখে স্বামীর ঘরে ফেরত পাঠান মা মেনকা। ঠিক তেমনটাই করে থাকেন বাঙালি ঘরের বধূরা। গৌরীর সঙ্গে নিজেরাও সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন সকলে। এ বড় আনন্দের দিন।
কিন্তু সিঁদুর খেলার পরে অনেকেই নানা রকম সমস্যায় ভোগেন। মূলত ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বা হাঁচির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন কোনও সমস্যা থেকে থাকলে আগেই সাবধান হওয়া দরকার। প্রয়োজনে সঙ্গীদের বলে রাখতে হবে যাতে কোনও ভাবেই সিঁদুর নাকে মুখে চলে না যায়।
আর যাঁরা ত্বকের সমস্যার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য রইল কিছু ছোট ছোট টিপস—
ভারী মেক-আপ—
মন খুলে সিঁদুর খেলতে হবে। তাই আগেই সুরক্ষা স্তর তৈরি করে রাখা যাক ত্বকের উপর। বিষয়টা মোটেও জটিল কিছু নয়। যে ভাবে রোজ বাইরে বেরোনো হয় সে ভাবেই। বরং আজ একটু বেশি মেক-আপ করা যাক। তাতে দেখতেও যেমন ভাল লাগবে, পাশাপাশি ত্বক আর সিঁদুরের মধ্যে তৈরি হবে একটা পর্দা। সিঁদুর সরাসরি এসে ত্বকে লাগবে না। তা হলেই কেল্লা ফতে।
আরও পড়ুন : সাঙ্গ হবে ঠাকুর দেখার পর্ব, বিজয়া দশমীর রাতের ঘরোয়া আড্ডায় সঙ্গী হোক সিল্ক
প্রথমেই মুখ ধুয়ে ভাল করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। ঠিক যেমন দোল খেলার আগে সারা গায়ে নারকেল তেল লাগিয়ে নেওয়া হয়। এতে বাইরে থেকে এসে সিঁদুর ত্বকের ভিতরে ঢুকতে পারবে না। তুলে ফেলাও সহজ হবে।
এরপর খানিকটা সানস্ক্রিন মেখে নিতে হবে। তারপর যে ভাবে মেক-আপ করতে পছন্দ, সে ভাবে বেস মেক-আপ করে নিলেই হল।
ঠোঁটের সুরক্ষা—
ঠোঁটের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। ভাল করে বেস মেক-আপ করে লিপস্টিক লাগিয়ে নিতে হবে।
ঘোমটায় অনন্য—
চুলের ক্ষেত্রে সিঁথিতে তো সিঁদুর লাগবেই খানিকটা। দোলের মতো মাথায় নারকেল তেল মেখেও বেরোনো যাবে না স্বাভাবিক ভাবেই। তবে গোটা মাথায় সিঁদুর যাতে না লাগে তার জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। লাল পাড় সাদা শাড়িতে একখানা ঘোমটা দিয়ে নিলে মন্দ হয় না। দেখতেও বেশ সাবেকি লাগবে। পাশাপাশি গোটা চুলে সিঁদুর লাগার হাত থেকেও বাঁচা যাবে খানিকটা।
সিঁদুর তোলার পদ্ধতি—
মণ্ডপে সিঁদুর খেলা সেরে বাড়ি ফিরে মুখ ভাল করে ধুতে হবে। সাবান দিয়ে ঘষাঘষি করার কোনও প্রয়োজন নেই। এমনিতে সিঁদুর জল দিলেই উঠে যাওয়ার কথা। বাকিটার জন্য ব্যবহার করতে হবে হালকা কোনও ফেস ওয়াশ।
আরও পড়ুন : নবমী নিশি পোহালেই বিজয়া দশমী, বিষাদ ভুলে সনাতনী সাজে সাজুন সিঁদুরখেলায়
টক দইয়ের কামাল—
মুখ, ঘাড়, কানের পিছনে, হাতে লেগে থাকা সিঁদুর তোলার জন্য প্রথমে জল দিয়ে ধুয়ে খানিকটা টক দই মেখে নেওয়া যেতে পারে। একই কাজ করতে হবে চুলেও। মিনিট পাঁচ-দশ অপেক্ষা করে স্নান সেরে ফেলতে হবে।
স্নানের সময়ও হালকা গ্লিসারিন সাবান, অ্যালোভেরা শ্যাম্পু ব্যবহার করাই ভাল।
ত্বকের যত্ন—
এর পর মুখে, ঘাড়ে, হাতে ভাল করে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে নিতে হবে। নিজের বাড়িতে গাছ থাকলে তো খুবই ভাল। না হলে কেনা অ্যালোভেরা জেলও লাগিয়ে নেওয়া যায়। এতে ত্বক যেমন নরম হবে, কোনও রকম অ্যালার্জি শুরু হয়ে থাকলেও তা খানিকটা রক্ষা পাবে।
ফেস প্যাক—
টক দই, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস, একটু মধু মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে রাতের দিকে মুখে, গলায়, ঘাড়ে লাগিয়ে নিতে হবে। মিনিট ১৫ পর ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিতে হবে। এর পর টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।
তবে ত্বকে বা চুলের গোড়ায় যদি কোনও রকম সংক্রমণ দেখা যায়, একেবারে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুব জরুরি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Sindurkhela, Vijaya Dashami