এটা খুবই সত্যি যে বাবা মা হওয়া জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অভিজ্ঞতা এবং সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজ। যেহেতু পেরেন্টিং একটা ২৪/৭ ঘন্টার কাজ ,সারাদিনে সবকিছু করে ওঠা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এর ফলে বাবা মায়েরা দৈনন্দিন কাজে এতো বেশি জড়িয়ে পড়েন যে প্রায়ই সন্তানদের কাছে আবেগগতভাবে উপলব্ধ হওয়ার গুরুত্বকে হারিয়ে ফেলেন।
বাবা মা হিসাবে, আমরা সারা বিশ্বের দুঃখ, কষ্ট থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে চায়। কিন্তু অসাবধানতাবশত এটি আমাদের এবং বাচ্চাদের মধ্যে একটি প্রাচীর তৈরী করে দেয়। ফলে বাচ্চারা অভিভাবকদের সাথে নিজের চিন্তাভাবনা এবং আবেগ ভাগ করে নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।
কেন আমাদের শিশুদের কাছে আবেগগতভাবে উপলব্ধ হওয়া এতটা গুরুত্বপূর্ণ?
এটি শিশুদের বুঝিয়ে দেয় যে তাদের সবাই কতটা ভালোবাসে এবং পাশে থাকে ।
এটি তাদের সেই নিরাপদ স্থানের অনুভূতি দেয় যেখানে তারা নিজেদের মনের সুখ দুঃখ ,আবেগকে প্রকাশ করতে পারে।
এটি বাবা মায়ের সাথে বাচ্চাদের মনের বন্ধনকে আরো বেশি মজবুত করতে পারে।
এটি তাদের বিকাশ এবং উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।
ডাঃ চাঁদনী তুগনাইত, এমডি আমাদের শিশুদের কাছে আবেগগতভাবে উপলব্ধ হতে সাহায্য করার জন্য পাঁচটি টিপস শেয়ার করেছেন:
সেই মুহুর্তে উপস্থিত থাকুন : যখন আমরা আমাদের বাচ্চাদের সাথে থাকি, তখন আমাদের উপস্থিতি এবং তাদের সাথে সম্পূর্ণভাবে জড়িত থাকা খুবই দরকার। এর অর্থ হল আমাদের ফোন , টিভি সরিয়ে দিয়ে আমাদের অবিভক্ত মনোযোগ শিশুদের ওপর দেওয়া। শিশুরা আমাদের পূর্ণ মনোযোগের যোগ্য। আমাদের উপস্থিতি তাদের বুঝিয়ে দেয় যে তারা বাবা মায়েদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
তাদের অনুভূতিকে বুঝুন : তাদের অনুভূতিগুলিকে বোঝার চেষ্টা করুন এবং সেগুলো আপনাদের সাথে ভাগ করার জন্য শিশুদের ধন্যবাদ জানান। এটি তাদের বুঝিয়ে দেয় যে তারা যা কিছু করছে তা আমরা দেখি এবং বুঝতে পারি। সমর্থন এবং আশ্বাস প্রদান করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের নিজস্ব আবেগকে প্রকাশ করা : আমাদের আবেগগুলিকে সুন্দর এবং সুষ্টভাবে প্রকাশ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমাদের বাচ্চারা সে পথ অনুসরণ করতে পারে।
বাচ্চাদের কথা শুনুন : কোনোরকম রায় না দিয়ে তাদের কথা শুনুন। পরামর্শ দিতে চাওয়া বা তাদের কী করা উচিত এসব না বলে শুধু শুনুন তারা কি বলেছে ।ফলে বাচ্চারা নির্দ্বিধায় নিজের মনের অনুভূতিগুলোকে আমাদের সাথে ভাগ করে নেয় ।
সারা বছর যোগাযোগের রাস্তাগুলো খোলা রাখুন : যোগাযোগ হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলির মধ্যে একটি যা শিশুরা শিখতে পারে। ভাল যোগাযোগ শিশুদের নিজেদেরকে প্রকাশ করতে, অন্যদের বোঝাতে এবং বুঝতে এমনকি মজবুত সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
শিশুরা যখন কমুনিকেট করার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে, তখন তারা ঝুঁকি নিতে এবং কোনো কিছু অন্বেষণ করতে অগ্রসর হয়। দ্বন্ধ মেটাতে এবং আবেগ পরিচালনার ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে আমরা শিশুদের সামগ্রিক বিকাশে সাহায্য করতে পারি।
সর্বোপরি, পিতামাতা হিসাবে আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র আমাদের সন্তানদের ভালবাসা এবং সমর্থন করা নয়, বরং তাদের একটি সুখী এবং সফল ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Children, Parenting Tips, Parents