যা গরম পড়েছে, তাতে শরীর ঠান্ডা রাখতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। আর গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ঘোলের জুড়ি মেলা ভার! এই গরমে কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে যদি এক গ্লাস ঠান্ডা ঘোল পাওয়া যায়, তাহলে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও জুড়িয়ে যায়। আর এটা তো শরীরের জন্য উপকারীও বটে! বিশেষজ্ঞদের মতে, এক কাপ ঘোলে ১১০ ক্যালোরি, ৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩ গ্রাম ফ্যাট, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১ গ্রাম ফাইবার রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ঘোলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রো-বায়োটিকও রয়েছে। ফলে এটা গরমের দিনে পেটের জন্য খুবই ভালো। আর ঘোলে থাকা ভিটামিন-এ আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্র, কিডনি ও ফুসফুসের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও ভালো রাখে। এছাড়া গরমে ক্লান্তিভাব এলে এক গ্লাস ঘোল খেলে তৎক্ষণাৎ এনার্জি পাওয়া যায়। তাই এবার জেনে নেওয়া যাক, ঘোল বা বাটারমিল্কের সহজ রেসিপিগুলির বিষয়ে।
বাটারমিল্ক সম্বর বা ঘোলের সম্বর:
প্রেসার কুকারে আধ কাপ অড়হড় ডাল, ১ টেবিল-চামচ হলুদ গুঁড়ো, আধ কাপ লাউ এবং স্বাদ মতো নুন দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। এবার একটি ব্লেন্ডারে আধ কাপ কোরানো নারকেল, ২টি কাঁচা লঙ্কা, ১ টেবিল-চামচ সরষে এবং জল দিয়ে মিশ্রণ বানাতে হবে। এর পর এই মিশ্রণে আধ কাপ ঘোল ও স্বাদ মতো নুন দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার একটি প্যানে ভোজ্য নারকেল তেল, সর্ষে ও কারি পাতা ফোড়ন দিয়ে তাতে সেদ্ধ করা ডাল, নারকেল ও ঘোলের মিশ্রণ দিতে হবে। তার পর ১০ মিনিট ধরে তা মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। এবার ঘোলের সম্বর ভাতের সঙ্গে গরমাগরম পরিবেশন করার জন্য একদম তৈরি।
ঘোল ও সুজি চিলা:
একটি বড় বাটিতে আধ কাপ সুজি, ৪ টেবিল-চামচ বেসন, ১ কাপ ঘোল, স্বাদ অনুযায়ী নুন, আধ চা-চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, আধ চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো, ২টি কুচোনো কাঁচা লঙ্কা, ১টি পেঁয়াজ, ১/৪ কাপ কুচোনো ক্যাপসিকাম নিয়ে ভালো করে মেশাতে হবে। এর পর এই মিশ্রণটি ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। এবার প্যান গরম করে তাতে অল্প তেল গ্রিজ করে ব্যাটারটি দিয়ে সোনালি রঙ না-হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিতে হবে। এর পর ধনেপাতা অথবা পুদিনার চাটনির সঙ্গে ঘোল ও সুজির চিলা পরিবেশন করা যাবে।
ঘোল দিয়ে তৈরি কাড়ি:
একটি ব্লেন্ডারে আধ কাপ বেসন, ১ কাপ ঘোল, নুন, ১ টেবিল-চামচ হলুদ গুঁড়ো ভালো করে ব্লেন্ড করতে হবে। একটি কড়াই গরম করে ২ টেবিল-চামচ সর্ষে, ১ টেবিল-চামচ পাঁচফোড়ন, ২টি শুকনো লঙ্কা এবং ৬-৮টি কারি পাতা ফোড়ন দিতে হবে। এর পর বেসন ও ঘোলের মিশ্রণটা ঢেলে দিতে হবে। এবার কম আঁচে ১৫-২০ মিনিট ধরে ক্রমাগত নাড়িয়ে যেতে হবে। হয়ে গেলে আঁচ নিভিয়ে পরিবেশন করা যাবে ঘোলের কাড়ি।
ঘোলের ইডলি:
শুকনো খোলায় ২ কাপ সুজি ভেজে তা ২ কাপ ঘোলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এভাবে ১৫ মিনিট মতো মিশ্রণটি ঢেকে রাখতে হবে। আর প্রয়োজন হলে তাতে আরও ঘোল দিতে হবে। এবার ওই মিশ্রণে আধ চা-চামচ বেকিং সোডা যোগ করলেই তৈরি হয়ে যাবে ইনস্ট্যান্ট ইডলি মিক্স। এর পর স্বাদ মতো নুন মিশিয়ে ইডলি মেকারে ওই মিশ্রণ ঢেলে স্টিম করে নিলেই প্রস্তুত সুস্বাদু ঘোলের ইডলি।
পিয়ুশ:
প্রথমে ২ কাপ শ্রীখন্ড, ২ কাপ ঘোল এবং ২ কাপ দুধ ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এর পর এতে স্বাদ মতো গুঁড়ো চিনি, ১ চা-চামচ এলাচ গুঁড়ো, আধ চা-চামচ জায়ফল গুঁড়ো এবং ১ টেবিল-চামচ কেশর-জল দিয়ে পুনরায় ব্লেন্ড করতে হবে। সব শেষে বাদাম দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করার জন্য প্রস্তুত পিয়ুশ।
ঘোলের শরবত:
এটি খুবই সহজ ও জনপ্রিয়, যা হজমে সাহায্য করে। এর জন্য এক গ্লাস ঘোলে ১ টেবিল-চামচ রোস্টেড জিরে, নুন, আধ চা-চামচ গোলমরিচ, ধনেপাতা কুচি দিয়ে ভালো ভাবে নাড়াতে হবে। স্বাদ বাড়াতে আধ চা-চামচ চিনি যোগ করা যেতে পারে।
ঘোল এবং ভাত:
এটা অনেকটা দই-ভাতের মতো। বড় বাটিতে ১ কাপ ভাত, ১ কাপ ঘোল, নুন, অর্ধেক শশা কুচি, অর্ধেক পেঁয়াজ, ২ টেবিল-চামচ রোস্টেড বাদাম, অল্প কিছু বেদানা, আধ চা-চামচ গোলমরিচ, আধ চা-চামচ বিট নুন মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ১ টেবিল-চামচ বাদাম তেলে ৬-৮টি কারিপাতা, ২টি শুকনো লঙ্কা এবং ১ চা-চামচ সর্ষে ফোড়ন দিয়ে তা ওই ভাতের মিশ্রণে মিশিয়ে নিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Buttermilk